অভ্যন্তরীণ (সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী) ও তাদের দায়িত্বঃ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একটি দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থার মূল চালিকাশক্তি। তারা সরকারি নীতিমালা বাস্তবায়ন, নাগরিক সেবা প্রদান এবং রাষ্ট্রের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেন। সরকারি কর্মকর্তারা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং তাদের সততা, দক্ষতা ও দায়িত্ববোধ একটি রাষ্ট্রের সুশাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হয়।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গুরুত্বঃ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভূমিকা বহুমুখী এবং জটিল। তারা দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন-শৃঙ্খলা, অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তাদের প্রধান কাজগুলো নিম্নরূপ—
- 1. প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা** – সরকারি অফিস, দপ্তর ও সংস্থাগুলো সঠিকভাবে পরিচালনা করা।
- 2. আইন প্রয়োগ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা** – আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ ও অন্যান্য প্রশাসনিক সংস্থার মাধ্যমে আইন প্রয়োগ করা।
- 3. নাগরিক সেবা প্রদান** – শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, কৃষি, সামাজিক নিরাপত্তা ইত্যাদি খাতে জনগণকে সেবা দেওয়া।
- 4. উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন** – রাস্তাঘাট, হাসপাতাল, স্কুল, ব্রিজ নির্মাণসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা।
- 5. সুশাসন প্রতিষ্ঠা** – দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধঃ একজন সরকারি কর্মচারীকে হতে হবে
- সৎ, নিষ্ঠাবান ও জনবান্ধব**। তিনি যদি সঠিকভাবে তার দায়িত্ব পালন না করেন, তাহলে প্রশাসনিক দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও জনসেবায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। তাই তাদের জন্য নিম্নলিখিত গুণাবলী থাকা আবশ্যক
- সততা ও স্বচ্ছতা** – দুর্নীতি পরিহার করে ন্যায় ও নৈতিকতা বজায় রাখা।
-
- নাগরিকদের প্রতি দায়িত্বশীলতা** – জনগণের কল্যাণে কাজ করা এবং সরকারি সুযোগ-সুবিধা সঠিকভাবে বিতরণ করা।
-
- কাজের দক্ষতা** – প্রযুক্তি ও আধুনিক জ্ঞানের মাধ্যমে কাজের গুণগত মান বৃদ্ধি করা।
-
- দেশপ্রেম ও সেবার মনোভাব** – দেশ ও জনগণের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চ্যালেঞ্জঃ সরকারি কর্মকর্তারা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন,
যেমন—
- দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি** – কিছু ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
- অধিক কাজের চাপ** – প্রয়োজনের তুলনায় জনবল কম থাকায় কর্মচারীদের অতিরিক্ত কাজ করতে হয়।
- প্রযুক্তিগত দক্ষতার অভাব** – অনেক কর্মকর্তা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকেন।
- রাজনৈতিক চাপ** – কিছু ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে স্বাভাবিক প্রশাসনিক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।
সমাধান ও উন্নয়নের উপায়ঃ সরকারি প্রশাসনকে আরও কার্যকর ও জনবান্ধব করতে হলে নিম্নলিখিত উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন—
- সরকারি কর্মচারীদের
- উন্নত প্রশিক্ষণ** প্রদান করা।
-
- প্রশাসনে **দুর্নীতি প্রতিরোধে কঠোর আইন** প্রয়োগ করা।
- আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে ডিজিটালাইজেশন** নিশ্চিত করা।
-
- বেতন ও সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি** করে কর্মকর্তাদের আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়া।
-
- জনগণের মতামত** গ্রহণ করে প্রশাসনিক উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা।
সর্বশেষঃ
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দেশের উন্নয়নের অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি। তাদের সততা, দক্ষতা ও দায়িত্বশীলতার ওপর নির্ভর করে দেশের সুশাসন ও নাগরিক সেবার মান। সুতরাং, সরকারি প্রশাসনকে আরও উন্নত, স্বচ্ছ ও জনকল্যাণমুখী করতে হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং দুর্নীতি দমন করতে হবে। তাহলেই একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে।
এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে "ক্লিক হেয়ার" বাটনে ক্লিক করুন ।